জ্বীন শয়তান থেকে বাঁচার একটি বিশেষ আমল
November 15, 2023ঘর থেকে বের হওয়ার দো’আ পড়ার গুরুত্ব⚠️
November 15, 2023সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ; আজকে আলোচনা করবো একটি কুরআনের রিজিক ব্যয় সংক্রান্ত একটি আয়াত নিয়ে এবং যেভাবে আয়াতটি মেনে চললে আপনার রিজিকে বরকত হবে ইন শা আল্লাহ।
▫️আল্লাহ ছুবহানাহুওয়াতা’আলা পবিত্র কুরআন মাজীদে বলেন :
“তারা তোমাকে (রাসূল ছাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া ছাল্লামকে) জিজ্ঞাসা করে, তারা কী ব্যয় করবে? বলো, ‘তোমরা যে সম্পদ ব্যয় করবে, তা পিতা-মাতা, আত্মীয়, ইয়াতীম, মিসকীন ও মুসাফিরদের জন্য। আর যে কোন ভাল কাজ তোমরা কর, নিশ্চয় সে ব্যাপারে আল্লাহ সুপরিজ্ঞাত’।”
• সূরা বাকারা আয়াত ২১৫
আমরা কি কখনো ভেবে দেখি বা মনের মাঝে কি এই প্রশ্ন আসে যে আমাদের মাস শেষে যে বেতন পাই কিংবা আমাদের যে টাকা ইনকাম হয় এটা প্রথমে কার কার পিছনে খরচ করতে হবে এটার ইসলামি কোনো নির্দেশনা আছে কিনা ?? আমরা এটা কল্পনাও করি না। অথচ সাহাবায় কেরামরা ঠিকই জীবনের প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে ইসলামের নির্দেশনা খুঁজতেন জানতে চাইতেন যার ফলে তাদের জীবন ছিলো সফল।
আচ্ছা এখন কথা হলো উক্ত আয়াতে আল্লাহ ছুবহানাহুওয়াতা’আলা কিভাবে নিজের টাকাটা ব্যয় করতে হবে এটা সিরিয়াল অনুযায়ী বলে দিয়েছেন। সিরিয়ালের প্রথমেই হলো পিতা মাতা, অর্থ্যাৎ আপনি যে টাকা পাচ্ছেন মাস শেষে, তখন আপনার মাথায় সবার আগে পিতা মাতার খরচের কথা আসতেই হবে। জ্বী আপনার সন্তান আপনার স্ত্রী এদের আগেও আপনার পিতা মাতার হক সবচেয়ে বেশি আপনার প্রত্যেক মাসিক উপার্জনের উপর! অথচ মানুষ এখন মাসিক উপার্জনের একটা অংশ বাবা মা কে দিবে তো দূরের কথা ঘরেই জায়গা দেয় না! আফসোস সেই হতভাগাদের জন্য যারা তাদের বাবা মা কে বৃদ্ধাশ্রমে রাখে। এরা তো নিজেরাই বাবা মা হওয়ার অযোগ্য এজন্য যে নিজের সন্তানকেও লালন পালন করে উপলব্দি হলো না তার বাবা মা তাকে কতোটা কষ্ট করে লালন পান করেছেন শৈশব কৈশরে! যাইহোক, ধরেন আপনার বাবা মাকে আপনার অন্য ভাইয়েরা দেখা শুনা করে আপনার সাথে আপনার বাবা মা থাকে না। এক্ষেত্রেও কি আপনি বাবা মা কে আপনার উপার্জনের অংশ দিবেন?? জ্বী অবশ্যই দিতে হবে কারন বাবা মা তো শুধু একার না আপনারও। ওরা ওদের দায়িত্ব পালন করতেছে আপনি কি দায়িত্ব পালনের বাহিরে? সিরিয়ালের দ্বিতীয় হলো আত্মীয় যেটার মাঝে আপনার পরিবার অর্থ্যাৎ সন্তান স্ত্রী এছাড়া অন্যান্য আত্মীয়রা অর্ন্তভুক্ত। এভাবে ইয়াতীম, মিসকীন ও মুসাফিরদের জন্যও খাত রয়েছে। শেষের যে খাত (মুসাফির) বাস্তবে এটার উদাহরণ দেখেছি। একটা পরিবার ছিলো যারা তাদের বাসায় বেড়াতে আসা আত্মীয় ধরেন গ্রাম থেকে আসা আত্মীয় শহরে কয়েকদিন বা সপ্তাহ থেকে যেতো। এখন ওই আত্মীয় সে কিন্তু আত্মীয় এবং মুসাফিরও বটে! কারন সে জার্নি করে দূর কোনো জায়গা থেকে এসেছে আপনার বাসায়। তো ওই পরিবারটি দেখতাম ওই গ্রাম থেকে আসা আত্মীয়দের যখন তারা আবার ফিরে যেতো তখন যাওয়ার বেলায় তাদেরকে (মুসাফির মেহমান) কিছু টাকা দিতো। কেনো দিতো জানেন❓ কারন এই যে তারা গ্রাম থেকে এসেছে এবং আসার সময় এটা সেটা নিয়ে আসছে এতে তো তাদের নিজেদের পকেটের টাকা খরচ হয়েছে এবং তারা যে বেড়াতে এসে থাকছে অনেক সময় দেখা যায় যে তাদের কাজ ফেলে রেখে আসতে হয় এবং ওই আত্মীয়দের দেখতাম যাওয়ার সময় পরিবারের ছোট বাচ্চাদের কিছু টাকা দিয়ে যেতো। তো এগুলো সব ভেবে ওই পরিবারের লোকজন তাদের মেহমানদের বিদায় বেলা কিছু টাকা দিয়ে দিতো কারন যাওয়ার সময় তো ওদের খরচ আছে সেই সাথে তারা এই কিছুদিনের সফরেও তো খরচ হয়েছে। মেহমানরা তখন খুবই খুশি হতো! এই যে ওদেশ খুশি হওয়াটা এটাই আপনার সম্পদে বরকত আসার একটা কারন হতে পারে! আপনার বাবা মা কে আপনার মাসিক উপার্জনের কিছু টাকাটা সবার আগে পৌঁছে দেওয়াটা আপনার রিজিকে বরকত জীবনে বরকত আসার একটা কারন হতে পারে! যদি আল্লাহ ছুবহানাহুওয়াতা’আলা খুশি হয়ে যান যে আমার বান্দা আমার একটা কুরআনের আয়াতের উপর আমল করতেছে পৃথিবীর কোনো জীন শয়তান যাদু কেউ যদি করেও রাখে আপনার উপর আমার দৃঢ় বিশ্বাস এগুলো কাজ করবে না! আপনারা যে রিজিকের অডিও শুনেন সেখানে তো রিজিক সংক্রান্ত আয়াতই বেশি তিলাওয়াত করা হয়ে থাকে কিন্তু আপনি সেই রিজিক সংক্রান্ত আয়াত যদি নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করে থাকেন তাহলে সেটার ফল যে কতো ভালো হতে পারে তা আমার আপনার চিন্তারও বাহিরে তাই না! অনেকে এরকমও থাকতে পারে যে বাবা মা তো বৃদ্ধ হয়ে গেছে ওরা টাকা দিয়ে কি করবে?? এটা বাজে একটা ধারণা যে টাকা দিয়ে কি করবে ?? এটা আপনার দেখার বিষয় না। আপনার দায়িত্ব হলো আপনাকে যেভাবে ব্যয় করতে কুরআনে বলা হয়েছে আপনি সেভাবে ব্যয় করবেন। অল্প পরিমানে হলেও দিবেন। তারা খুশি হবে এবং বাবা মা আপনার উপর সন্তুষ্ট হলে আল্লাহ ছুবহানাহুওয়াতা’আলাও আপনার উপর রহমত করবেন। অনেক জিনিসই হয়তো তাদের খেতে মন চায় কিনতে মন চায় কিনতু উপার্জন না থাকায় পারে না আপনার থেকে প্রতি মাসে এরকম পেলে তারা অনেক খুশি হবে এবং আপনি তাদের প্রিয় সন্তান হয়ে যাবেন সেটা যতোই দূরে থাকুন না কেনো! ইন শা আল্লাহ।