রুকইয়াহ তে এনেমার ভুমিকা বনাম দাজ্জালী প্রচারণা।
October 28, 2022আশিক জিনকে শায়েস্তা করার টিপস!
January 2, 2023রুকইয়াহর প্রয়োজনে আবরনের উপর মহিলা রোগীদেরকে স্পর্শ করা নিঃশর্ত কি হারাম? আলিমদের ফাতওয়া কি বলে?
-লিখেছেন- আব্দুল্লাহ ফাহাদ
প্রথম কথা এই মাস’আলার পক্ষে বিপক্ষে সকল আলোচনা শাইখ খালিদ আল হাবাশী ওনার “হুকমু লামসুল মার’আতি ফির রুকইয়াহ” তে নিয়ে এসেছেন। ওনার কিতাবের আলোচনার ক্রমধারা এরুপ-
১) চিকিৎসার স্বার্থে স্পর্শের মৌলিক বিধান ও দলীলের আলোকে প্রাচীন মাস’আলা এবং মাযহাবদের রায়সমূহ।
২) রুকইয়াহ তে এই বিধানের প্রয়োগ।
৩) এর ভেতরে থাকা ফিকহি ইখতিলাফ।
৪) সমসাময়িক আলিমদের ফাতওয়া
৫) ফাতওয়ার আলোকে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
৬) এ ব্যাপারে বিরোধীতাকারী ও পক্ষাবলম্বনকারীদের বাস্তবতা।
৭) আলিম ও রাকীদের দায়িত্ব কর্তব্য।
সুতরাং এই মাস’আলা ভালভাবে বুঝতে হলে পুরো কিতাব সম্মিলিতভাবে মুতালা’আ করা ও গবেষনা করার বিকল্প নেই।
শাইখ ওনার কিতাবে পক্ষে বিপক্ষে সকল ফাতওয়া নিয়ে আসেন শুধু এটা প্রমান করার উদ্যেশ্যে যে, এটি একটি প্রতিষ্ঠিত ফিকহি ইখতিলাফ। যেমনটি অনেক জ্ঞানহীন লোক দাবী করে থাকে যে, রুকইয়াহ তে জরুরতে স্পর্শ করা নিঃশর্তভাবে বৈধ নয়। এরপর তিনি এই ইখতিলাফের কোনটির উপর আমল করা হবে সে ব্যাপারে নির্দেশনা দেন।
আমার এই পোস্ট লিখার উদ্যেশ্য এই নয় যে, এর পক্ষে বিপক্ষের বৈধতা প্রদান করা। বরং এটা ভালভাবে জানতে চাইলে অবশ্যই পুরো কিতাব পড়া জরুরী এবং উক্ত কিতাবে উল্লেখিত প্রায়োগিক নির্দেশনা অনুসরন করা জরুরী। নতুবা পুর্ন জ্ঞান না আসার দরুন তালিবুল ইল্মদের পক্ষে এই মাস’আলা পরিপূর্নভাবে অনুধাবন করা সম্ভব হবেনা। আমি আবারো বলছি, এই পোস্ট লিখার উদ্যেশ্য ইখতিলাফি অবস্থান কে প্রতিষ্ঠিত করা এবং সেই স্বল্প জ্ঞানের লোকদের মুখ বন্ধ করে দেওয়া যারা খন্ডিত আলোচনা বা খন্ডিত ফাতওয়া উল্লেখ করে মানুষ কে বিভ্রান্ত করছে। এখানে আমি কিতাবে উল্লিখিত আলিমদের বৈধতার ফাতওয়া গুলো শুধু উল্লেখ করে দিচ্ছি যার দ্বারা এই মাস’আলার ফিকহি ইখতিলাফের প্রতিষ্ঠিত জায়গাটি পরিস্কার হয়ে যায়।
এই পোস্ট লিখার আরেকটি উদ্যেশ্য হচ্ছে, সেসকল রোগীদের কে বিভ্রান্তি থেকে রক্ষা করা। যাদের সুস্থতার স্বার্থে মূলত এই মাস’আলার উদ্ভব।
তার পূর্বে হুকমু লামসুল মার’আ কিতাবের একটি অংশ তুলে ধরে এরপর ফাতওয়ার লিংক সমূহ তুলে ধরছি। প্রতিটি ফাতওয়ার সাথে মুল কিতাবের ছবি যুক্ত করা আছে।
(কিতাবের পৃষ্ঠা ২১)
তৃতীয়ত:: যে ব্যক্তি নিজের জামানার স্বীকৃতিপ্রাপ্ত কোন আলেম ও মুফতির ফতোয়ার আলোকে আমল করে থাকেন, তাকে খোঁচা মেরে [ট্রল করে] কথা বলার কারো কোন অধিকার নেই। কেননা যে ব্যক্তি এ ধরনের কাজ করে (মুকাল্লিদ কে খোচা মেরে কথা বলে) সে যেন ইখতিলাফি ও দালীল ভিত্তিক মাসআলায় মুফতির উপর অপবাদ দিলো।
——
লামসুল মার’আ ফির রুকইয়াহ কিতাবের পৃষ্ঠা ৫১-
ইজতেহাদ ও তাকলিদের বিষয়ে উলামায়ে কেরামের বাণী::
শায়েখ সালেহ ফাওযানের বক্তব্যের সারমর্ম:
– উলামায়ে কেরামের জন্য ইজতেহাদের দরজা উন্মুক্ত। চাই ব্যক্তি বিশেষ হোক অথবা ফিকহ বোর্ড গঠনের মাধ্যমে হোক।
– প্রত্যেক বিষয়ে নির্দিষ্ট একটি ফতোয়া দেওয়া এবং প্রত্যেক বিষয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেয়া উভয়টি অসম্ভব।
– ফুরুয়ী ও ইজতেহাদী বিষয়ে সাহাবায়ে কেরাম রাঃ এর মধ্যেও এখতেলাফ ছিল,তা সত্ত্বেও কেউ কাউকে ট্রল করেননি।
– আকিদা ও দ্বীনের মৌলিক বিষয়ে এখতেলাফে লিপ্ত হওয়া জায়েজ নয়।
– কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে এখতেলাফ করা কোন ক্ষতিকর বিষয় নয়।
অনুরূপভাবে আমরা উল্লেখ করে এসেছি যে الفتاوي الذهبية في الرقي الشرعية কিতাবটি একাধিক ভাষায় অনূদিত হয়েছে, এবং সতের বছরের চেয়ে অধিক সময়ে আরবিতে প্রকাশিত হয়, এবং অধিকাংশ রাকী ঐ ফতোয়া সমূহের উপর আমল করে আসছেন।
উদাহরণ স্বরূপ: ইন্দোনেশিয়ায় আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের বৈশিষ্টের অধিকারী ধার্মিক রাকীগণ রয়েছেন যারা রুকইয়াহ এর ক্ষেত্রে আমাদের দেশের আলেমদের ফতোয়া মেনে চলেন,এটি হচ্ছে ফু ও মাসেহ জায়েজ হওয়ার ক্ষেত্রে শায়েখ ইবনে জিবরীনের ফতোয়ার সবচেয়ে বড় দৃষ্টান্ত। এবং এই বিষয়ে একাধিক ফতোয়া রয়েছে যার উপর তারা এখন পর্যন্ত গতানুগতিক আমল করে যাচ্ছেন।
——
পৃষ্ঠা সংখ্যা ৫৩!
সুতরাং নির্ভরযোগ্য বিশ্বস্ত ফতোয়া সমূহের মাধ্যমে রাকীর বিধান সুস্পষ্ট প্রকাশ পাওয়ার পরও কি আমরা রাকী ভাইদের কে এ কথা বলতে পারি যে, তোমরা হারাম কাজে লিপ্ত! তোমরা গুনাহগার! অথচ আমরা অবগত হলাম যে,মুকাল্লিদ আহলে ইলমের দেওয়া ফতোয়ার উপর আমল করলে তার কোন গোনাহ নেই।।। ( আল্লাহ তায়ালা সকলকে সঠিক বুঝ দান করুন আমীন)
চিকিৎসার ক্ষেত্রে মহিলাকে স্পর্শ করার বিধান।
১ম কথা: জরুরত ব্যতিত জায়েজ নয়।
২ য় কথা: জরুরতের হালতে জায়েজ।
৩য় কথা: এই জায়েজের বিষয়ে উলামায়ে কেরাম সবাই একমত, তবে তার হদ অর্থাৎ সীমারেখা নিয়ে এখতেলাফ রয়েছে।
পক্ষের ফাতওয়া সমূহের লিংক-
শাইখ বিন বায রাহঃ এর দ্বিতীয় ফাতওয়া-
শাইখ ইবনে উসাইমিন রাহঃ এর প্রথম ফাতওয়া-
শাইখ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহমান বিন জিবরিনের ফাতওয়া-
শাইখ আব্দুর রহমান বিন জিবরীনের দ্বিতীয় ফাতওয়া-
القواعد الذهبية في الرقي الشرعية তে বর্নিত ফাতওয়া। যেই ফাতওয়া ইন্দোনেশিয়ার আহলুস সুন্নাহর রাকীসহ পৃথিবীর অধিকাংশ রাকীগন অনুসরন করে থাকেন।
ইসলামি সাইটের ফাতওয়া সমূহ (ইসলামওয়েব)। ফাতওয়া প্রদানে শাইখ আব্দুল্লাহ আল কাফি-
তৃতীয় ফাতওয়া- যাদুর রোগের চিকিৎসায় গায়রে মাহরাম কে স্পর্শের বিধান।
চতুর্থ ফতোয়া: কুরআনের মাধ্যমে চিকিৎসা প্রদানকারীর স্পর্শ করার হুকুম-
ষষ্ঠ ফতোয়া: যাদুর শরয়ী চিকিৎসা-
মূল কিতাবের ডাউনলোড লিংক-