
জ্বিন ও যাদুর আক্রমণের কারণ ও প্রতিকার
August 22, 2025
❝ঈদে মিলাদুন্নবী- ভালোবাসার নামে বিদআত, জ্বীন ও যাদুর ফাঁদ❞
September 1, 2025“হিজামাহ”
রাসূল ﷺ এর সুন্নাহ চিকিৎসা ও সহীহ হাদীসসমূহ-
▪️হিজামাহ (Cupping Therapy) হলো শরীর থেকে অস্বাভাবিক বা দূষিত রক্ত বের করে চিকিৎসা করার একটি প্রাচীন ও প্রমাণিত পদ্ধতি। আধুনিক বিজ্ঞানের দৃষ্টিতেও এটি অত্যন্ত কার্যকর। কিন্তু এর সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হলো—এটি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর প্রিয় চিকিৎসা পদ্ধতি। অসংখ্য সহীহ হাদীসে হিজামাহর গুরুত্ব, সময় এবং উপকারিতা উল্লেখ আছে।
এ আর্টিক্যালে আমরা রাসূল ﷺ এর হিজামাহ সম্পর্কিত সহীহ হাদীসসমূহ আলোচনা করবো।
▪️হিজামাহ সম্পর্কিত সহীহ হাদীসসমূহ
১. সর্বোত্তম চিকিৎসা
আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত:
রাসূল ﷺ বলেছেন:
“তোমাদের চিকিৎসার মধ্যে সবচেয়ে উত্তম চিকিৎসা হলো হিজামাহ।”
[সহীহ বুখারী: 5696, সহীহ মুসলিম: 1577]
২. রাসূল ﷺ নিজে হিজামাহ করেছেন
ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত:
“রাসূলুল্লাহ ﷺ হিজামাহ করেছেন এবং অন্যদেরকেও হিজামাহ করতে বলেছেন।”
[সহীহ বুখারী: 5697]
৩. হিজামাহর জন্য উত্তম দিন
আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) বলেন:
রাসূল ﷺ বলেছেন:
“যে ব্যক্তি সপ্তদশ, উনিশ বা একুশ তারিখে হিজামাহ করবে, তার জন্য তাতে শিফা রয়েছে।”
[সুনান আবু দাউদ: 3861, সহীহুল জামে: 5968 – সহীহ]
৪. ফেরেশতাদের সুপারিশ
রাসূল ﷺ বলেছেন:
“আমি ফেরেশতাদের কাউকে অতিক্রম করিনি, তারা সবাই বলেছে—হে মুহাম্মাদ! আপনার উম্মতের উপর হিজামাহ করার নির্দেশ দিন।”
[সুনান ইবনে মাজাহ: 3477, সহীহুল জামে: 5671 – সহীহ]
৫. মাথাব্যথা ও যাদুর চিকিৎসা
ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন:
“রাসূল ﷺ মাথাব্যথা হলে হিজামাহ করাতেন এবং বলতেন: এটা ভালো চিকিৎসা।”
[সহীহ বুখারী: 5701]
এছাড়া, যাদুর প্রভাব থেকে মুক্তির সময়ও রাসূল ﷺ হিজামাহ করেছিলেন।
৬. হিজামাহর মজুরি বৈধ
আনাস (রাঃ) বলেন:
“রাসূল ﷺ হিজামাহকারীকে তার মজুরি দিয়েছেন।”
[সহীহ বুখারী: 2278, সহীহ মুসলিম: 1577]
💠হিজামাহ থেকে শিক্ষণীয় বিষয়
হিজামাহ হলো শরীয়ত স্বীকৃত চিকিৎসা।
রাসূল ﷺ নিজে করেছেন, তাই এটি সুন্নাহ।
নির্দিষ্ট দিন (১৭, ১৯, ২১ তারিখ) উত্তম সময় হলেও প্রয়োজনে যেকোনো দিন করা যায়।
মাথাব্যথা, জাদু, ও অন্যান্য অসুস্থতায় এটি উপকারী।
হিজামাহকারীর মজুরি নেওয়া বৈধ।
ফেরেশতারা হিজামাহ করার জন্য সুপারিশ করেছেন—এটি এর গুরুত্ব প্রমাণ করে।
▪️হিজামাহ শুধু শারীরিক অসুস্থতার চিকিৎসা নয়, বরং রাসূল ﷺ এর সুন্নাহ এবং আল্লাহর রহমত প্রাপ্তির একটি উপায়। আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানও এর উপকারিতা প্রমাণ করেছে। তাই মুসলিম উম্মাহর উচিত হিজামাহকে ভুলে না যাওয়া, বরং সুন্নাহ হিসেবে জীবনে অন্তর্ভুক্ত করা।